Homeসারাদেশঅর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে, লাভের মুখে কুয়াকাটা

অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে, লাভের মুখে কুয়াকাটা

কেএম শাহাবুদ্দিন শিহাব, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পটুয়াখালীর সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটায় হাজারো পর্যটকদের আগমনে লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছেন কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ এক মাস রমজান উপলক্ষে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। । তবে এবারের ঈদ ও বাংলা নববর্ষের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনৈতিক এ খরা কাটতে শুরু করেছে।

গত কয়েকদিনের ন্যায় আজ মঙ্গলবারও (১৬ এপ্রিল) দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সৈকতের চায়ের  দোকানি থেকে শুরু করে হোটেল- মোটেল সহ অন্যান্য  ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মাঝে ছিল ব্যস্থতার ছাপ। দম ফেলানোর সময় ছিল না কারোরই। যে যার মতো করে পর্যটকদের সেবায় সময় কাটিয়েছে।

স্থানীয় শুটকি মাছ  ব্যবসায়ী মো: রাসেল মৃধা বলেন,ঈদের আগে  আমার দোকানে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ উঠাইছি, রমজানে বেচাকিনা না হওয়ার কারণে কিছুটা চিন্তিত ছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ ঈদের দিন থেকে এই পাঁচ ছয় দিনে আমার ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে,মহাজন কিছু টাকা পেত দিয়া দিছি,এখন আমি চিন্তামুক্ত।

সৈকতের ফটোগ্রাফার মো : সবুজ  জানান, আমি সৈকতের ছবি তুলে জীবিকা নির্বাহ করি, এক মাস আয় বাণিজ্য বন্ধ ছিল, বাচ্চাদের জন্য  ঈদের কেনাকাটা তেমন করতে পারিনি, যেটুকু কিনছিলাম অর্ধেক টাকা বাকি রেখে আসছি, আলহামদুলিল্লাহ ঈদের দিন থেকে এখন পর্যন্ত আমি প্রায় ৯০০০ টাকা ইনকাম করেছি, দোকানে কিছু টাকা পেত পরিশোধ করেছি, এখনো লোকজন আছে, এখন যা  ইনকাম করব,তার থেকে কিছু সঞ্চয় করতে পারব ইনশাআল্লাহ।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করেছেন থাকার হোটেল এবং খাবার হোটেলের কর্মচারীরা। শতভাগ বুকিং ছিল কুয়াকাটার ১ম শ্রেণীর  হোটেলগুলো এবং ২য় শ্রেণীর হোটেলগুলো তেও ৬০ থেকে ৭০ পার্সেন্ট বুকিং ছিল।

আবাসিক হোটেল খান প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান রাসেল  বলেন, রমজান মাস জুড়ে হোটেল খালি ছিল। রমজানে স্টাফ বেতন ও বিদ্যুৎ বিলসহ লাখ লাখ টাকা লোকসান। তবে ঈদের পরদিন থেকেই পর্যটকের সংখ্যা ছিল অনেক। ঈদের ছুটিতে আমাদের শতভাগ রুম বুকিং হয়েছে। এ সপ্তাহের পুরোটাই শতভাগ বুকড।

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সাধারণ সম্পাদক কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের বিক্রি বেড়েছে। সবাই লাভের মুখে।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, প্রতিটি হোটেল- মোটেলের  প্রায় ৮০ শতাংশ রুম বুকিং ছিল।  রমজানের ঘাটতি শতভাগ পুষিয়ে না উঠতে পারলেও  আমরা ৭০% সমস্যা কাটিয়ে উঠছি। এখনো পর্যটকরা ফোনে রুম বুকিং দিচ্ছেন।,আশা করি এ সপ্তাহে  দীর্ঘ ১ মাসে রমজানের সময়টাতে যে লোকসান ছিল,সেটা শতভাগ কাটিয়ে উঠতে পারবে আমাদের হোটেল মোটেলগুলো।

পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা  জোনের  পুলিশ সুপার মো: আনসার উদ্দিন  বলেন, কুয়াকাটাতে  ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আসা পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে আমরা সর্বদা সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। যে সকল পর্যটক কুয়াকাটাতে এসেছে  তাদের জন্য নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, এখানে পোশাকে এবং সাদা পোশাকেও আমাদের লোকজন দায়িত্ব পালন করতেছে, কুয়াকাটার সীবিচকে   সুরক্ষিত রাখার জন্য, এবং পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments