Homeঅন্যান্যআমতলী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে বাঁশের বেড়া; যাত্রী সেবা সড়কে।

আমতলী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে বাঁশের বেড়া; যাত্রী সেবা সড়কে।

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:-৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আমতলী পৌরসভার মিনি বাসস্ট্যান্ডে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। সড়কে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় দশ হাজার যাত্রী। নির্মাণ কাজ সমাপ্তির তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাসস্ট্যান্ড খুলে দিচ্ছে না পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। দ্রুত ওই বাস স্ট্যান্ড খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে উপকুলীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার পৌর শহরের দুটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ওই বাসস্ট্যান্ড দুটি নির্মাণে চার কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। ওই বাসস্ট্যান্ড দুটি নির্মাণ কাজ পায় বরগুনার মেসার্স আল মামুন এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদার বরগুনা পৌরসভার সাবেক মেয়র শাহাদাত হোসেন। কিন্তু আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান নিজের লোকজন দিয়ে তিনি ওই কাজ করান। নির্ধারিত সময়ে বাসস্ট্যান্ডের কাজ শেষ হয়। কিন্তু কাজ সমাপ্তির তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাসস্ট্যান্ড দুটি খুলে দেয়নি মেয়র এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। হাসপাতালের সড়কের বাসস্ট্যান্ড খালি অবস্থায় পড়ে আছে। ভিতরে যাকে কোন গাড়ী প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। অপর দিতে খোন্তাকাটা এলাকার অপর বাস স্ট্যান্ডটি স্থানীয় কিছু ট্রাক ব্যবসায়ী ট্রাকে রেখে দিয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের কাউন্টারগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। ওই বাস স্ট্যান্ড দুটি যাত্রী সেবার কোনই কাজে আসছে না। বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে অন্তত দুই শতাধিক পরিবহন বাস ও অর্ধ শতাধিক লোকাল বাস চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ড থাকা সত্ত্বেও ওই বাসগুলো সড়কে দাড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে হচ্ছে।

বাস মালিক সোহেল গাজীর অভিযোগ, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বাসস্ট্যান্ড খুলে না দিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছে যাতে স্ট্যান্ডে বাস পাকিং করতে না পারে। এতে রাস্তায় পাশে কাউন্টার রেখে সড়কের মধ্যে বাস দাড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে হচ্ছে। মেয়র মতিয়ার রহমানের খামখেয়ালিপনার এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত দশ হাজার যাত্রী। তার আরো অভিযোগ বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টারগুলো মেয়র মতিয়ার রহমানের একান্ত সহকর্মীদের নামে বরাদ্দ দিতেই তিনি এমন টালবাহানা করছেন। গত তিন বছরে স্ট্যান্ড খুলে দিচ্ছে না। রাতে সড়কের পাশে গাড়ী পাকিং করতে হচ্ছে। দ্রুত এ বাসস্ট্যান্ড দুটি খুলে দিয়ে যাত্রী সেবা ও গাড়ী পাকিং নিশ্চিত করনের দাবী জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, হাসপাতাল সড়কের বাসস্ট্যান্ড বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকানো। খোন্তাকাটা বাস স্ট্যান্ডের ভিতরে ট্রাক রাখা আছে। কাউন্টারের কক্ষগুলো তালা বন্ধ।

যাত্রী শাওন, জাকির, কামাল, খলিলুর রহমান ও মাসুদ বলেন, বাসগুলো সড়কের ওপরে থামিয়ে যাত্রীদের ওঠানামা করাচ্ছে। এতে বাসে ওঠানামা করতে বেশ ঝুঁকি থাকে। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী সেবা দিলে আমাদের ভোগান্তির পোহাতে হতো না।

স্থানীয় হারুন মিয়া, মাহমুদ, রিপন গাজী ও পান্নু গাজী বলেন, বাস স্ট্যান্ড খুলে না দিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছে, যাতে ভিতরে গাড়ী পাকিং করতে না পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাস কাউন্টার মালিক বলেন, বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টার থাকা সত্ত্বেও আমাদের সড়কে যাত্রী ওঠা-নামা করাতে হয়। এতে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ড ও কাউন্টার খুলে দিলে যাত্রী সেবায় সমস্যা হতো না।

গাড়ী চালক সওকত বলেন, রাতে স্ট্যান্ডে গাড়ী পাকিং করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এসে দেখি বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকানো। উপায় না পেয়ে সড়কের পাশে বাস পাকিং করেছি। রাত বিরাতে এটা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বাসস্ট্যান্ড বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে মলমুত্র ত্যাগ করায় আটকে রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বাসস্ট্যান্ডে বাঁশের বেড়া দেয়া থাকলে তা দ্রুত উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments