Homeআঞ্চলিককলাপাড়া উপজেলার কৃষকরা মরিচ চাষে ব্যস্ত

কলাপাড়া উপজেলার কৃষকরা মরিচ চাষে ব্যস্ত

কেএম শাহাবুদ্দিন শিহাব, স্টাফ রিপোর্টঃ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ধান চাষের পর আরও অধিক মুনাফা লাভের আশায় মরিচ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কৃষকরা। জমি তৈরি এবং চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব চাষিরা। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় মরিচ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এই অঞ্চলের কৃষক। মরিচ চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় ধান চাষসহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি মরিচ চাষে ব্যাপক আগ্রহী বাড়ছে এসব কৃষকদের।

কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের তথ্য মতে, মরিচ চাষের মৌসুম শুরু হয় মূলত নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। কৃষকরা জমিতে বীজ বপন করেন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে কেউ কেউ ভাল দাম পাওয়ার আশায় অক্টোবর থেকেই আগাম জাতের মরিচ চাষ করে থাকেন। এছাড়া, দেরিতে চাষ করলে শীতে কুয়াশার কারণে মরিচের গাছে রোগ বালাই দেখা দেয়। এজন্য আগাম জাতের চাষ করতে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এরমধ্যে আগাম মরিচ চাষিরা ফসল সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করেছেন। তবে মরিচ চাষ করার ৫০ দিন পর থেকে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। এরপর ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যেই ফলন সংগ্রহ করা যায়। শুকনো মরিচ করার জন্য কৃষক জমি থেকে ফসল সংগ্রহ করে চাষ করার ৪ থেকে ৫ মাস পর।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,মরিচ একটি অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল। জমিতে বিঘা প্রতি ১৫/২০ মণ মরিচ উৎপাদন হয়। প্রতিমণ কাঁচা মরিচ হাটে-বাজারে ২৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রয় করা যায়।

কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ গ্রামের কৃষক মুরাদ মৃধা বার্তা২৪.কে জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। জমির মাটি ভেজা থাকায় আগাম চাষ করতে পারেননি তিনি। । ২ বিঘা জমিতে দেশি উফমি জাতের মরিচ লাগিয়েছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করে ফসল তোলা পর্যন্ত তার খরচহবে প্রায় ২৫ – ৩০ হাজার টাকার মত। তিনি জমির মরিচ পাঁকিয়ে শুকনো মরিচ করে বিক্রি করবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এক বিঘা জমি থেকে তার শুকনো মরিচ সংগ্রহ করা হবে ৭- ৯ মণ। শুকনো মরিচের মৌসুমে বাজারে ৫-৬ হাজার টাকা প্রতি মণ বিক্রি হয়। সে অনুযায়ী আমি আশা করতেছি এক বিঘা জমি থেকে মরিচ বিক্রি করব প্রায় ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। যা প্রায় দ্বিগুন লাভ।

উপজেলার কুয়াকাটার কৃষক সেরাজুল হক বার্তা২৪.কে জানান, মরিচের জমিতে মাসে ২ বার পানি দিতে হয়। এ সময় জমিতে সারও দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে কীটনাশক দিতে হয়। আমি ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছি। এই মরিচ কখনো পাকানো হয় না। হাইব্রিড জাতের মরিচের গাছ থেকে একাধিকবার ফসল সংগ্রহ করা হয়। গাছ কেটে অথবা নষ্ট না হলে গাছে ফলন আসার পর থেকে জুন -জুলাই মাস পর্যন্ত ফলন দেয়। মরিচ চাষে ভালো লাভ হয়। এবার আমি বেশি ফলনের আশা করছি।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, এ বছর ৬৮০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। ফল বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রোগবালাই ও সার ব্যবস্থাপনা মাঠপর্যায়ে প্রত্যক্ষ করছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গিয়ে মরিচ চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। । আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মরিচ চাষে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন এবং তারা যাতে তাদের পন্যের ন্যায্য মূল্য পায় এ বিষয়ে আমরা বদ্ধপরিকর।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments