Homeআঞ্চলিককুয়াকাটায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, পানিবন্দী হাজার হাজার পরিবার

কুয়াকাটায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, পানিবন্দী হাজার হাজার পরিবার

জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতটি বঙ্গোপসাগর থেকে ফুঁসে ওঠা জলোচ্ছ্বাসে ডুবে আছে।কুয়াকাটা সৈকত লাগোয়া জাতীয় উদ্যান, পর্যটন পার্ক, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লি এলাকা জোয়ারের চাপে ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে সৈকতে নামার রাস্তার পাশে অবস্থিত পর্যটন পুলিশ বক্স, এর পাশের চা-পানের দোকানসহ বেশ কিছু স্থাপনা। সৈকতে নামার প্রধান সড়কটি জোয়ারের চাপে অন্তত ২০ ফুট ভেঙে বিলীন হয়েছে। কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান, পর্যটন পার্ক-সংলগ্ন এলাকার কয়েক শ ঝাউগাছ, নারিকেলগাছ উপড়ে পড়েছে। সৈকতের জোয়ারের পানিতে লাশের মতো গাছগুলো পড়ে আছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কুয়াকাটা সহ পটুয়াখালীর জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো পানিবন্দি রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। উপকূলের অনেক স্থানে এখনো ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে বাতাসের চাপ নেই বললেই চলে। ঘূর্নিঝড় রেমালের তান্ডবে গত দুই দিনে জেলায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।
ঘূর্ণিঝড় রেমালে কুয়াকাটার ওয়ারকা পল্লির ১৫০টি ঘরের মধ্যে ২৫টি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। ২৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শামুক-ঝিনুক, শুঁটকি মাছের দোকান, চা-পানের দোকান, খাবার হোটেলসহ অন্যান্য এক শতাধিক স্থাপনার চাল উড়ে গেছে। এতে প্রতিটি দোকানের মালামাল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ এলাকার বাঁধের বাইরে পাশের আরও অন্তত ১০০ ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
এদিকে অতি বর্ষণে কুয়াকাটা পৌরসভার পশ্চিম কুয়াকাটা, মাঝিবাড়ি, তুলাতলী, নবীনপুর, রাখাইন মহিলা মার্কেট এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক তথ্যমতে, জেলায় ৯১০৫ টি পুকুর,৭৬৫ টি মাছে ঘের এবং ১২০টি কাঁকড়া ঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে মৎস্য চাষীদের ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৩৫০০ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে, হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে জেলা ত্রান কর্মকর্তা।
এছাড়াও পটুয়াখালীতে ৩ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া উপজেলায় ৪ কিলোমিটার বেরীবাঁধ আংশিক বিধ্বস্ত হয়ে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে অনেক স্থানের বিদ্যুতের খুটি ভেঙে পড়ে আছে। গত দুইদিন ধরে বিদ্যুৎহীন রয়েছে অনেক এলাকা।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা আজই মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হবে। আশা করছি ক্ষতিগ্রস্থরা সহায়তা পাবে। এদিকে জেলার বিভিন্নস্থানে পড়ে থাকা গাছ অপসারনে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস এবং  মহিপুর  থানা পুলিশ ও কুয়াকাটা নৌপুলিশ,কুয়াকাটা ট‍্যুরিস্ট পুলিশ সহ স্থানীয় অনেক স্বেচ্ছাসেবী।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments