Homeজাতীয়কুয়াকাটা সৈকত পর্যটকদের পদভারে মুখরিত,হোটেল না পেয়ে বাসাবাড়িতে পর্যটক

কুয়াকাটা সৈকত পর্যটকদের পদভারে মুখরিত,হোটেল না পেয়ে বাসাবাড়িতে পর্যটক

মুহাঃ মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সঙ্গে সাপ্তাহিক বন্ধ মিলে চারদিনের ছুটিতে কুয়াকাটায় আগমন ঘটেছে নানা বয়সী হাজার হাজার পর্যটকের। এতে কানায় কানায় পূর্ণ কুয়াকাটা সৈকতের প্রতিটি পয়েন্ট।

প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটার সুবিশাল সমুদ্র এবং একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। এখন বিদেশী পর্যটকদেরও আনাগোনা বাড়ছে এখানে। সামনে রমজানের বন্ধ এবং স্কুল-কলেজের বার্ষিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিক্ষা সফরে হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারণায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই এখন কুয়াকাটায়। দীর্ঘ সৈকতে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। এসব দৃশ্য উপভোগ করতে কুয়াকাটায় এরইমধ্যে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছে। বর্তমানে পর্যটকের ঢল থাকলেও বিগত সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে দীর্ঘ দিন পর্যটক শূন্য ছিল কুয়াকাটা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটক হয়েছে আজকে। সকাল বেলার শীতের আমেজ কাটতে না কাটতেই সৈকতের পানিতে গোসল ও উল্লাসে মেতেছেন হাজারো পর্যটক।

অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে আবাসিক হোটেল-মোটেল। আগেভাগে বুকিং না দিয়ে আসা পর্যটকরা হোটেল মোটেলে জায়গা না পেয়ে অবস্থান করছেন আশপাশের বাসাবাড়িতে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, নিজেদের মতো করে সৈকতে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন পর্যটকরা। শিশুরা বালুপানিতে গা মিশিয়ে আনন্দ করছে। তরুণ-তরুণী ও মধ্যবয়সীরা নোনা পানিতে মেতেছেন গোসলে। ছাতার নিচে বসে বিশাল সমুদ্রের জলরাশি ও গর্জন উপভোগ করছেন বৃদ্ধরা। অসংখ্য পর্যটকদের আগমনে ব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন নানা পেশার ব্যবসায়ীরা।

খুলনা থেকে আসা রহমত নামের একজন বলেন, ‘পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। তবে হোটেলে রুম পাইনি। পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে আমরা রয়েছি।’

কুয়াকাটা পৌরসভার পাঞ্জুপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল সুকানি। তিনি বলেন, ‘আমার বাসা কুয়াকাটা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। আমার থাকার পাশাপাশি অতিরিক্ত দুটি রুম রয়েছে। একটি রুম দুদিনের জন্য তিন হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছি। কুয়াকাটায় যখন অতিরিক্ত পর্যটক আসে তখন আমি বিভিন্ন ভাড়ায় রুম দুটি ভাড়া দিয়ে থাকি। গ্রামের পরিবেশে রুমগুলো কম ভাড়ায় পেয়ে পর্যটকরা অনেক খুশি থাকে।’

কথা হয় কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি যুক্ত হওয়ায় তিন চারদিনের টানা পর্যটকদের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ১০ দিন আগে থেকেই হোটেলগুলো বুকিং হতে শুরু করেছে। আজ যারা হোটেল বুকিং না দিয়ে কুয়াকাটায় এসেছেন তারা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, কুয়াকাটায় বর্তমানে ২০০টি আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে, যার ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার পর্যটক। এর বাইরে অতিরিক্ত ভিড়ের সময়গুলোতে আশপাশের প্রায় পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৩০০ বাসাবাড়ি প্রস্তুত থাকে। সবমিলিয়ে ৩০ হাজার পর্যটক রাত্রিযাপন করার সুযোগ রয়েছে কুয়াকাটায়।

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, টানা ছুটিতে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়। যে কারণে আগে থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকটি টিম মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি ও সাদা পোশাকে আমরা কাজ করছি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments