Homeআঞ্চলিকতালতলীর ভূমিহীনদের দৃষ্টিনন্দন স্বপ্নের বাড়ি

তালতলীর ভূমিহীনদের দৃষ্টিনন্দন স্বপ্নের বাড়ি

তালতলীর ভূমিহীনদের দৃষ্টিনন্দন স্বপ্নের বাড়ি

বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলীতে খোট্টার চর এলাকায় গড়ে উঠেছে দুস্থ-অসহায় মানুষের স্বপ্নের বাড়ি। যথাযথ মান বজায় রেখে জলবায়ুর ঝূঁকি এড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে টেকসই করে নির্মাণ করা হয়েছে এসব দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। লটারীর মাধ্যমে ১৪৮টি স্বপ্নের বাড়ি বিতারণে গৃহহীন মুক্ত মানুষের মাঝে বাঁধ ভাঙা উল্লাস বিরাজ করছে।

গতকাল শনিবার(৩০ ডিসেম্বর) বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা নিজেই লটারীর মাধ্যমে ১৪৮টি স্বপ্নের বাড়ি বুঝিয়ে দিয়েছেন গৃহহীন মুক্ত মানুষদের মাঝে।

জানা যায়, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার চর এলাকায় পায়রা নদীর কোল ঘেষেই সরকারের ৪.২৭ একর খাস জমির ওপর ১৪২টি বাড়ি নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। সুপেয় পানির জন্য বসানো হয়েছে ১৪টি গভীর নলক‚প। বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে ঘরগুলোতে আলো পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে এসব বাড়ি নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষের জন্য মুজিব শতবর্ষে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এসব স্বপ্নের বাড়িতে এখন থেকে সুবিধাভোগী মানুষ বসবাস শুরু করতে পারবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তর উপহারের এ সকল বাড়ি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ১০০টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২২টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৫০টি ও চতুর্থ পর্যায়ে ১৮৭টি পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে। খাস জমিতে ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান করে একক গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমি পাকা ঘরে একটি টয়লেট, একটি রান্না ঘর ও ইউটিলিটি স্পেস রয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মান ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫’শ টাকা। এ উপজেলার সর্বমোট ৪৫৯টি পরিবার এই ঘর পেয়েছেন। ইতিমধ্যে এ সব পরিবারকে জমি সহ ঘরের দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে।

তালতলী উপজেলা শহরের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে এসব বাড়ি। সুবিধাভোগীরা প্রতিদিন সকালে পায়ে হেঁটেই উপজেলা শহরে আসতে পারবেন ও কাজ করতে পারবে। শিশুদের পড়াশুনার জন্য নিকটেই রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিত্যপণ্য দ্রব্য ক্রয়ের জন্য কাছেই রয়েছে তালতলী বাজার। প্রকৃতির জলাধার থেকে মাছ আহরণে বাড়ির পাশেই রয়েছে পায়রা নদী । এসব অসহায় পরিবার গুলোকে স্বাবলম্বী করতে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা বৃদ্ধি করে আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

ভূমিহীন মুক্ত ফারজানা বেগমের চোখে ডেকেছে আনন্দ অশ্রæর বান। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে, জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, আমার পরিবার নিয়ে মানুষের জায়গায় কুঁড়েঘর তুলে থাকতাম। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমি জমিসহ ইটের একখানা নতুন ঘর পাবো। শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দিবেন। এই বয়সে ইটের ঘরে থাকতে পারবো। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। দোয়া করি শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই রাস্তার ধারে ফুটপাত বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পেলেন। এর ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এই উপজেলা ইতিমধ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে কেউ ভূমিহীন ও গৃহহীন হয় তাহলে তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমি নিজে থেকেই লটারীরর মাধ্যমে ঘর গুলো বুঝিয়ে দিয়েছি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments