বরগুনায় গ্রাম পুলিশ নিয়োগে ইউপি চেয়ারম্যানের ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ
বরগুনা প্রতিনিধি:
গ্রাম পুলিশ (মহল্লাদার) নিয়োগ দেয়ার কথা বলে তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরাজী মোঃ ইউনুস ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করেও চাকুরী দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন পোষ্য কোঠায় আবেদনকারী মোঃ শাহীন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান পোষ্য কোঠা গোপন করে তার পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য রহিমা বেগমের ছেলে রানাকে নিয়োগ দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের কাছে আমার দেয়া টাকা চাইতে গেলে তিনি আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। চেয়ারম্যানের ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। দ্রুত এ নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে পুনরায় কোঠা অনুসারে নিয়োগ দেয়ার দাবী জানিয়েছেন তিনি
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহীন বলেন, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদে আমার দাদা হয়রত আলী গ্রাম পুলিশ হিসেবে চাকুরী শেষে অবসরে যান। এরপর আমার বাবা শাহ আলমকে পোষ্য কোঠায় একই পদে চাকুরী দেন তৎকালিন চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী জোমাদ্দার। আমার বাবার চার বছর চাকুরী থাকা অবস্থায় বর্তমান চেয়ারম্যান ফরাজী ইউনুস গত বছর ৭ নভেম্বর উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আমি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি (চেয়ারম্যান) আমাকে পোষ্য কোঠায় নিয়োগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং আমার কাছে আট লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। আমি তাৎক্ষনিক তাকে (চেয়ারম্যান) পাঁচ লক্ষ টাকা দেই। গত বছর ১৩ ডিসেম্বর তালতলী উপজেলা পায়রা সম্মেলন কক্ষে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় আমি অংশ গ্রহন করি। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ফরাজী ইউনুস আমার পোষ্য কোঠা গোপন রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুপমাকে ভুল বুঝিয়ে তার ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাহিমা বেগমের ছেলে রানাকে নিয়োগ দেয়। আমি জানতে পেরে আমার টাকা ফেরত চাইতে গেলে চেয়ারম্যান (ফরাজী ইউনুস) আমার টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চেয়ারম্যানের ভয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি বাড়ী যেতে পারছি না। আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। দ্রæত এ নিয়োগ বাতিল করে যথাযথ কোঠা অনুসারে নিয়োগ দেয়ার দাবী জানাই। তিনি আরো বলেন, আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান ফরাজী মোঃ ইউনুস ভয়ভীতি প্রদর্শণের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোন টাকা নেইনি। পোষ্য কোঠার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পোষ্য কোঠা সংরক্ষণ করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নিয়োগ বোর্ড। এখানে আমার কিছুই করার ছিল না। শাহীনের বাবার চার বছর চাকুরী থাকা সত্তেও কিভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
তালতলী থানার ওসি শহীদুল ইসলাম খাঁন বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।