কেএম শাহাবুদ্দিন শিহাবঃ সাগরকন্যা খ্যাত সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ লীলাভূমি পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় দীর্ঘদিন পরে পর্যটকের চাঞ্চল্যতা ফিরেছে।
সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার এবং শনিবার (২২ ও ২৩ ডিসেম্বর); সাথে চলমান ডিসেম্বরের বিজয় দিবস উপলক্ষে সরগরম কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট। পর্যটকদের এমন প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে আশার আলো দেখছেন সমুদ্রপাড়ের ব্যবসায়ীরা। আনন্দ-উল্লাসে মেতে আছেন পর্যটকরাও।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির ডাকা চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে পর্যটন বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে। দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় এবং ভ্রমণপিপাসু দর্শনার্থীদের মনে অবরোধের জ্বালাও পোড়াও ভয় থেকে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছিল কুয়াকাটা। তবে দু‘দিনের সাপ্তাহিক ছুটি ও অবরোধ না থাকায় সাগরকন্যার তীরে ছুটে এসেছেন বহু পর্যটক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,কুয়াকাটার সৈকতের জিরো পয়েন্ট, শুটকি পল্লী, রাখাইন পল্লী, গঙ্গামতির সৈকত, লাল কাকঁড়ার চর , কুয়াকাটার শ্রী বৌদ্ধ বিহার, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন ও সৈকতের ঝাউবাগানসহ অধিকাংশ পর্যটন স্পটে এখন পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। এ যেন এক মিলনমেলা।
পাশাপাশি ঝিনুক, আচার, শীতবস্ত্র ও বিভিন্ন চাদর, বার্মিস জুতো, বাচ্চাদের খেলনা ও বিভিন্ন শুটকি মাছের ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের আগমনে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
ভ্রমণে আসা পর্যটকরা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগসহ সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠছেন। আবার কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছেন, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
দীর্ঘদিন পরে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় স্থানীয় ১৮টি পেশার মানুষের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ব্যবসায়ীরা আগত পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড় ও সুবিধা দিচ্ছেন।
হোটেল কানসাই ইনের ম্যানেজার মো: জুয়েল ফরাজি বার্তা২৪.কে বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের হোটেলে ৮০ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। একমাসেরও বেশি সময় ধরে কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে এখন সবাই চেষ্টা করছে।
খুলনা থেকে আগত পর্যটক হাফেজ মোহাম্মদ মিলন হাসান বার্তা২৪.কে বলেন, ‘চাকরি করে সময় পাইনা, এখন এই সাপ্তাহিক ছুটিতে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা ঘুরতে আসলাম। এখানে এসে অনেক আনন্দ করতেছি। দীর্ঘদিনের ক্লান্তি সাগরের ঢেউয়ে হারিয়ে যাবে। তাই সাগরের পানিতে নিজেদের ভিজিয়ে নিচ্ছি।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘ছুটির দিন ও বিজয় দিবসের মাস উপলক্ষে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটকদের ভীড়। পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত এখন সৈকত। যেহেতু আমরা পর্যটক নির্ভর ব্যবসায়ী; এ পর্যটক আসলে আমরা লাভবান হই এবং আনন্দিতও হই।
কুয়াকাটা রিজওয়ানের পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বার্তা ২৪.কে জানান, ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। তাদের সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। বিভিন্ন টিমে ভাগ হয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। সার্বক্ষণিক মাইকিং করে পর্যটকদের সকল বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।