Homeরাজনীতিসরকার এখন ডামি ভোটার সৃষ্টিতে নজর দিয়েছে: মঈন খান

সরকার এখন ডামি ভোটার সৃষ্টিতে নজর দিয়েছে: মঈন খান

সব হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটি ‘সর্বজনীন ভোট বর্জনে’র আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ডামি প্রার্থী ও ডামি দল উৎপাদন করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা এখন ডামি ভোটার সৃষ্টিতে নজর দিয়েছে।

আজ শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) সকালে তাঁর বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মঈন খানের পাশে এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।

এই বিএনপি নেতা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে আলোচ্য বিষয় এবং নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন।

মঈন খান অভিযোগ করে বলেন, ‘সাতই জানুয়ারির একতরফা ও ভাগ বাটোয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে হাস্যরস ও সমালোচনা চলছে। সরকার নিজ দায়িত্বে ও মরিয়া উদ্যোগে প্রতিদিন সেটিকে প্রহসন ও সহিংসতার নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, এই একদলীয় বাকশালী সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাই তাদের অন্যায় ও অবৈধ হুমকিকে পরোয়া করার আর কোনও কারণ নেই। সার্বজনীন ভোট বর্জনের মাধ্যমে চলমান আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও অংশগ্রহণ একদলীয় শাসনের কবল থেকে বাংলাদেশের মানুষ শিগগিরই মুক্তি পাবে এই প্রত্যাশা আমরা ব্যক্ত করছি।

মঈন খান বলেন, ‘আমরা আজ গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি এই আহ্বান জানাবো, আপনারা এই জনপ্রিতিনিধিত্ববিহীন বর্তমান যে সরকার সেই সরকারের কোনও হুমকি-ধমকি অথবা তাদের কোনও ভয়-ভীতিতে চিন্তিত হবেন না। আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে সেই সরকারের প্রদত্ত ভয়ভীতির মোকাবিলা করুন, যে বা যারা আপনাকে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করতে চায় তাদের চিহ্নিত করুন।’

‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানাতে চাই— ভাতা কার্ড জব্দ করে কিংবা ভাতা বন্ধ করে কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করে কোনও অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত হবেন বা হচ্ছেন; ভবিষ্যতে তাদের আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে’, যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আজ থেকে অল্প কয়েক মাস আগে এক উপনির্বাচনে ৫৩ সেকেন্ডে ৪৭টি ভুয়া ভোটের সিল মারা হয়েছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আজ আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করার হুমকি, ভাতা কার্ডধারী অসহায় মানুষের জীবনজীবিকাকে হুমকিতে ফেলা কিংবা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোস্টাল ভোট অথবা অন্য কোনও ভূমিকায় তাদের অবতীর্ণ করিয়ে নির্বাচনে প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এর প্রত্যেকটি আইনগত অপরাধ। বিশেষত যারা আমাদের দরিদ্র ট্যাক্সপেয়ারের যে অবদান সেই অবদান থেকে রাষ্ট্রীয় ভাতা ও বেতন পাচ্ছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র থেকে এই সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। এটা দল ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোনও অনুদান নয়। অতএব ভাতা কার্ডের বিনিময়ে বাংলাদেশের কোনও নাগরিককে ভোট দিতে বাধ্য করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

বিএনপির একটি উদারনৈতিক শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দল উল্লেখ করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘বিএনপিকে নিয়ে অনেক গল্প সরকার সাজিয়েছে, অনেক মিথ্যা ঘটনা তারা সৃষ্টি করে তার দায়-দায়িত্ব বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে। আমরা জানি অতীতে হয়তো এমন একটি বিশ্ব পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিল… আপনারা জানেন। আফগানিস্তানের একটি চিত্র ছিল, তখন হয়তো সরকারের এই সব গাল-গল্প অনেককে মিথ্যাভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু আজকের পৃথিবী আলাদা। আজকে সরকার নতুন করে যদি সেই ২০১৪ এর ফর্মুলা অ্যাপ্লাই করে, বিএনপি এই শান্তিপূর্ণ উদারনৈতিক দলের কোনও মিথ্যা ভাবমূর্তি দেশে বা বিদেশে প্রচার করতে চায় বা চাইছে, কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘সরকার ভাবছে ৭ জানুয়ারি তাদের জয়লাভের দিন। আমি বলবো, ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের পরাজয়ের দিন। কারণ সেদিন তারা বাংলাদেশের নতুন করে অপমৃত্যু ঘটাবে।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মানুষ ভোট চুরি করে গোপনে, অথচ বাংলাদেশে হয় প্রকাশ্যে। আজ ৫ তারিখ, প্রত্যেকটি লোক জানে কোন আসন থেকে কে এমপি হচ্ছেন। তাহলে কিসের নির্বাচন? ৭ তারিখ হবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা। নির্বাচন তো হয়েই গেয়েছে। সে কারণেই আমরা এটাকে প্রত্যাখান করেছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভোট প্রত্যাখ্যান বা বর্জনের কথা বলেছি। সেটা আমাদের আইনগত অধিকার। মানুষ যেমন ভোট দিতে পারে, তেমনি মানুষ ভোট নাও দিতে পারে। অষ্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ড ছাড়া পৃথিবীর সব দেশেই সেই অধিকার প্রত্যেক ভোটারের আছে।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম পৃথিবীর কোথাও কুসুমাস্তীর্ণ পথে হয় না। এই দেশ গণতন্ত্রের জন্য সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments