Homeজাতীয়ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংসের মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী জাতি গড়ে তোলার চক্রান্ত রুখে...

ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংসের মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী জাতি গড়ে তোলার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে – মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলাম বিমুখ করে নাস্তিক্যবাদী জাতি গঠনে কাজ করা হচ্ছে। ভারতের প্রেসক্রিপশনে এদেশে শিক্ষা ও সংস্কৃৃতির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চলছে। মেধাশূণ্য জাতি গঠনের চক্রান্ত চলছে। দেশবিদেশের বড় বড় কোম্পানীর শীর্ষে ভারতীয়রা। আমাদের দেশের জনগণ করে সুইপার-ক্লিনারের কাজ। এটা দীর্ঘদিনের চক্রান্তের ফসল। তিনি বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে ডিভাইসমুখি করে গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের মেধা ও মননের ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশের মেধাবীদেরকে মূল্যায়ন না করায় তারা বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে। নাসার বিজ্ঞানীদের মধ্যে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী থাকলেও তাদের কোন মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
আজ শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে ‘বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন ও ট্রান্সজেন্ডারকে প্রোমোট’ করার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নূরুজ্জামান সরকার, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, কেএম শরয়াতুল্লাহ, মুফতী মাছউদুর রহমান, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, হাফিজুল হক ফাইয়াজ, হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া, মাইদুল ইসলাম সিয়াম, কাওছার মাহমুদ প্রমুখ।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্পষ্ট করতে হবে তিনি ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে। ৯২ ভাগ মুসলমানের শিক্ষা ব্যবস্থায় কারা ট্রান্সজেন্ডার সংযোজন করেছে, তাদের পরিচয় তুলে ধরতে হবে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সমকামিতার বিরোধিতা করায় আসিফ মাহতাব স্যারকে ব্র্যাক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি তাকে চাকুরীতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় ব্র্যাকের সকল প্রতিষ্ঠানকে বয়কট করা হবে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সরোয়ার স্যারকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এধরনের আস্ফালন মেনে নেয়া হবে না।
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা কারিকুলামের মধ্যে মুসনমানদের ইতিহাস ছিল। আবু বকর (রা.) এর ইতিহাস ছিল ওমরের ইতিহাস ছিল। ড. শহিদুল্লাহর হাজারও গল্প ছিল। কিন্তু এগুলোকে আজ বিলীন করা হচ্ছে। ওরা (ভারত) জানে কাঁটাতারের বেড়াই বড় সীমান্ত নয়, এদেশের বড় সীমান্ত হলো মুসলমান। যদি এদেশের মুসলমানকে নষ্ট করা যায়, তাহলে কাঁটাতারে বেড়া থাকবে না। এপার বাংলা ওপার বাংলা এক হয়ে যাবে।
সীমান্তে বিজিবি সদস্য হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বিজিবি হত্যাকান্ডের পরও কোন প্রতিক্রিয়া না থাকা প্রমাণ করে বিজিবির সদস্যদের পোশাক, বুট ও রাইফেল আছে, সাহস, রক্ত, মনুষ্যত্ব নেই।
মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষকে পশু বানাবার কাজ করছে। আমরা আশা করেছিলাম শিক্ষাব্যবস্থার অসঙ্গতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। সরকার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ঘুমের ভান করছেন। কিন্তু জনগণ জানে হাতুড়ি পেটা করে ঘুম ভাঙ্গাতে হয়। তিনি বলেন, দেশের সচেতন জনগণ, সাংবাদিকরা কেউ চায় না তাদের সন্তান পশু হয়ে যাক। তিনি ট্রান্সজেন্ডারের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পশু বানানোর চক্রান্ত মেনে নেয়া হবে না।
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, চলমান শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে আগামি ১৫ বছর পর দেশে শিক্ষিত কোন জাতি থাকবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় ৩৫০জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে একজনও পাশ করতে পারেনি পরকিল্পিতভাবে শিক্ষাব্যবস্থা পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে লোক এনে দেশ পরিচালনা করার জন্য। তিনি বলেন, শুধু ট্রান্সজেন্ডার নয়, পুরো শিক্ষাকারিকুলাম বাতিল করে নতুনভাবে দেশের দীনদার বুদ্ধিজীবী ও হক্কানী ওলামায়ে কেরামের পরামর্শে নতুন শিক্ষাকারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বর্তমান সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিরোধী দল না থাকলে কার্যকরি সংসদ থাকে না। সরকারও শক্তিশালী হয় না। জনগণ অধিকার বঞ্চিত হয়। এজন্য দেশে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। ডামি ও ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকারের যা মন চায়, তাই করছে। সরকারের সমাজসেবা দফতরের তালিকা অনুযায়ি ১০ হাজার হিজড়া। হিজড়া অধিকারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দিপুমনি পররাষট্র মন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশ থেকে ট্রান্সজেন্ডার আমদানি করেন। এরপর তাকে শিক্ষামন্ত্রী করা হলে তা শিক্ষাকারিকুলামে সংযোজন করানো হয়। এখন এটাকে বাস্তবায়ন করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে তাকে তা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এগুলো বন্ধ না করলে দেশের জনগণ তা প্রতিহত করতে বাধ্য হবে।
পরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, পল্টন মোড়, বিজয়নগরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments