Homeআঞ্চলিকপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনীয়,পর্যটনের সম্ভাবনাময় রাঙ্গাবালী !

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনীয়,পর্যটনের সম্ভাবনাময় রাঙ্গাবালী !

আনোয়ার হোসাইন(হৃদয়) রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালী জেলার সর্বদক্ষিনে রাঙ্গাবালী উপজেলা চোখ জুড়ানো রূপালী ‌রুপ সৌন্দর্য দর্শনীয় স্থান। বঙ্গোপ সাগরের উত্তরে চালিতাবুনিয়া নদী, আগুনমূখা নদী ও চর বিশ্বাস, পশ্চিমে রামনাবাদ চ্যানেল ও কলাপাড়া উপজেলা পূর্বে চর ফ্যাশন উপজেলার চর কুররী- মুকরী এবং দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর।
উপজেলার নামকরনঃ রাঙ্গাবালী উপজেলার নাম করনের সঠিক ইতহাস জানা যায়নি। তবে কথিত আছে যে, সাগর বক্ষে নতুন বালুচর সৃষ্টির ফলে কালের বিবর্তনে এই বালুচরের বালু লাল ছিল। এই ‘‘লাল’’ শব্দটি আঞ্চলিক ভাষায় রাঙ্গা নামে পরিচিত। এ থেকে রাঙ্গাবালি নামের উৎপত্তি। ইতিহাসবেত্তাগন জানান ১৭৮৪ সালে কতিপয় রাকাইন জনগোষ্ঠী আরাকান রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। তখন থেকে এতদঞ্চলে জনবসতি শুরু হয়।
 উপজেলার উৎপত্তিঃ ৭ জুন ২০১১ তারিখে নিকারের (ন্যাশনাল ইপপ্লিমেন্টেশন কমিটি ফর এ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম ) ১০৫তম সভায় রাঙ্গাবালী উপজেলার প্রশাসনিক অনুমোদন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ জুন ২০১১ তারিখে বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশিত হয়।
সাগর কন্যা খ্যাত পটুয়াখালী সাগর পাড়ের উপজেলা রাঙ্গাবালীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত কিছু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানঃ
১। সোনার চর দ্বীপ ও সমুদ্র সৈকতঃ পটুয়াখালীর সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোলে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে সোনার চর। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে ৪০ কিলোমিটার পূর্বে বুড়াগৌরাঙ্গ নদের মোহনায় বঙ্গোপসাগরে সোনার চর দ্বীপটির অবস্থান। সোনার চর পূর্ব-পশ্চিমে ৪ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে আড়াই কিলোমিটার। মোট আয়তন ১০ বর্গকিলোমিটার। গোটা দ্বীপটি যেন সাজানো-গোছানো এক বনভূমি। রয়েছে কেওড়া, সুন্দরী, গড়ান, হেঁতাল, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। নিভৃত সোনার চরে শুধু নানান ধরনের বৃক্ষের সমাহারই নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রাণীও। হরিণ, শিয়াল, মহিষ, বন্য শুয়োর, বানর এ বনের বাসিন্দা। রয়েছে চার কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। নগরের কর্মচাঞ্চল্য থেকে বহুদূরে এই সৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য এখনো অনেকের কাছে অজানা।
একই স্থানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় যা বিশ্বে বিরল। এ অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ বন মৌ চাষীদের মধু আহরণের অভয়ারণ্য।
২। চর হেয়ার দ্বীপ ও সমুদ্র সৈকতঃ সোনার চর সংলগ্ন মাত্র ০২ কিঃ মিঃ পশ্চিমে রয়েছে চর হেয়ার সমুদ্র সৈকত ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। প্রায় ৪.৬ বর্গকিলোমিটারের দ্বীপের ০৩ কিঃ মিঃ দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকত একেবারেই দক্ষিনের বঙ্গোপসাগর মুখি। ছোট বড় অসংখ্য লাল কাকড়ার অভয়ারণ্যের এই দ্বীপের অন্যতম বিশেষ দিক হলো একই স্থানে দাড়িয়ে সুর্যাস্ত ও সুর্যোদয় দেখা যায়।
৩। জাহাজমারা সমুদ্র সৈকত : উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে জাহাজমারা সৈকত। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি সবুজ বন। গাঁয়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে শোভাযাত্রার মতো মনে হচ্ছিল আমাদের মোটরসাইকেলের মিছিল! আমাদের অপেক্ষায় ছিলেন ওখানকার স্থানীয় কয়েকজন সহকর্মী। জাহাজমারা সৈকতে সারি সারি ঝাউবন আর পাখ-পাখালির কলরবে মুখরিত পরিবেশ। চিকচিকে বালুতে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি আর সাদা ঝিনুকের সমারোহ। দেখা মিলবে পাতি তিসাবাজ, সাদা কলার্ড মাছরাঙা, পানকৌড়ি, সাদা বক, খেকশিয়ালসহ নানা ধরনের পাখ-পাখালি আর বন্যপ্রাণী।
৪। দ্বীপ তুফানিয়াঃ জাহাজ মারা সমুদ্র সৈকতের সামান্য দক্ষিনেই রয়েছে চর তুফানিয়া দ্বীপ।চারদিকে নদী ও সাগর, আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা সবুজ বনাঞ্চলে সৃষ্ট এই দ্বীপ। প্রায় চার কিলোমিটার সমুদ্রতট ঘিরে রয়েছে বিশাল ঝাউবাগান। সেখানেও প্রায় ১ কিঃ মিঃ দীর্ঘ সৈকত। দেখা মিলবে পাতি তিসাবাজ, সাদা কলার্ড মাছরাঙা, পানকৌড়ি, সাদা বক, খেকশিয়ালসহ নানা ধরনের পাখ-পাখালি আর বন্যপ্রাণী।সাগর ও নদীর তীরে অবস্থিত সহজ সরল মানুষ এর বসবাস যারা আপ্যায়ন ও আন্তরিক। রাঙ্গাবালী সদরে সল্প খরচে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা  ।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments