Homeঅপরাধঅধ্যক্ষর অফিস কক্ষে ঢুকে শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

অধ্যক্ষর অফিস কক্ষে ঢুকে শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

আনোয়ার হোসাইন(হৃদয়) স্টাফ রিপোর্টার, রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালীঃ

কমিটি ও নিয়োগ দ্বন্দ্বের জেরে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ আব্দুল ছত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনকে শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে অফিস কক্ষের ভেতরে ঢুকে স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত লোকজন তাকে লাঞ্ছিত করে বলে অভিযোগ অধ্যক্ষের।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১০ টায় চরমোন্তাজ ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক-বর্তমান কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক আব্দুল ছত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অফিস কক্ষে ঢুকে পড়ে। একপর্যায় তাদের মধ্যে কয়েকজন অফিস কক্ষে অবস্থান করা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ রুহুল আমিনকে কিল-ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চরমোন্তাজ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা গেছে, কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে চরমোন্তাজ আব্দুল ছত্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গঠিত পরিচালনা পর্ষদ (কমিটি) অবৈধ উল্লেখ করে এবং ওই কমিটি দ্বারা স্কুলের তিন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া বাতিল চেয়ে ২০২২ সালের ২ আগস্ট আদালতে মামলা করা হয়। বিনা নির্বাচনে কমিটি গঠন ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য জসিম মোল্লা বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলা চলাকালীন সম্প্রতি তিন কর্মচারী নিয়োগ চ‚ড়ান্ত হওয়ার গুঞ্জনের জেরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। তারা বলেন, কমিটি ও নিয়োগ নিয়ে অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের সঙ্গে একটি পক্ষের দীর্ঘদিনের দ্ব›দ্ব চলছিল।

লাঞ্ছিত হওয়া আব্দুল ছত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘ঘটনার সময় ক্লাস শুরু হয়েছে। একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এই মুহুর্তে ২৫-৩০ জন যুবলীগের ছেলেপেলে অফিস কক্ষে ঢুকে পড়ে। যুবলীগের নজরুল, ইউসূব মাতুব্বর, শাহিন ও হারুন তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে । প্রথমে পরীক্ষার এডমিট নিতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অফিস থেকে বের করে দেয় তারা। পরে কলেজের খন্ডকালীন ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহিম খলিলকে কয়েকটা কিল-ঘুষি দিয়ে ফেলে দেয়। স্কুলের সহকারী শিক্ষক শৈলন চন্দ্র লাঞ্ছিত করে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ধাক্কা দিয়ে ঘুষি দিতে থাকে। আমি অফিস থেকে নামার চেষ্টা করেছি। নামতে দেয়নি, ধাক্কাধাক্কি করেছে। একপর্যায় আমি দৌড়ে অফিস থেকে নিচে নেমে আসি। এসময় আমার দুইটি মোবাইল ও ল্যাপটম নিয়ে যায়। প্রশ্নপত্রগুলো ছিড়ে ফেলে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওরা (হামলাকারীরা) ২০২২ সালে স্কুলের কমিটি এবং তিনজন কর্মচারীর নিয়োগ বাতিলের জন্য মামলা করছে। কিন্তু মামলায় করেও তারা কমিটি ও নিয়োগ স্থগিত করতে না পেরে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার কারণে একাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের আজকের (রোববার) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

জানা যায়, অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অংশগ্রহনকারীদের একজন চরমোন্তাজ ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোশাররফ মাতুব্বরের ভাই ইউসূব মাতুব্বর। ঘটনার সময় ইউপি সদস্য মোশাররফও ওই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মোশাররফ মাতুব্বর বলেন, ‘নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছে। কিন্তু নিয়োগটা কিভাবে দিল? জানলাম না, শুনলাম না। এই বিষয়টি জানতে স্কুলে গিয়েছিলাম। শিক্ষকদের সঙ্গে আমি আরও এক মেম্বার নিচে বসছি। এইসময় ১৫-১৬ জন অধ্যক্ষের রুমের দিকে গেছে। আমি কয়েকবার জিজ্ঞেসও করেছি। কিন্তু তারা শোনেনি। পরে শুনছি রুহুল আমিন মাস্টারকে নাকি অপমান করছে। কোন মারধরের কথা কেউ বলে নাই। ভাংচুরের কথাও শুনি নাই। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা আমাদের সাথে যায়ওনি।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘নিয়োগ সংক্রান্ত কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জেনেছি। অধ্যক্ষের সাথে কথা বলেছি। উনি কোন মামলা করবেন না। এবিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments