Homeআঞ্চলিকঅস্থায়ী শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধা, ৭২ বছরেও শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ...

অস্থায়ী শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধা, ৭২ বছরেও শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

এইচ এম রাসেল, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আমতলী উপজেলার ২২৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০০ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী মিনার নির্মাণ করে ২১ শে ফেব্রুয়ারী আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ৭২ বছরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ না করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষাথীরা। দ্রæত উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন তারা।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলায় ২২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩ টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৭ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ২৯ টি ও ৭টি কলেজ রয়েছে। উপজেলার ১২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুইটি কলেজ ও ১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। অপর দিকে উপজেলার কোন মাদ্রাসায়ই শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছে। এছাড়া যেগুলোতে শহীদ মিনার রয়েছে সেগুলো অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে থাকে। এগুলো সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের দু’এক দিন পূর্বে আমতলী কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারসহ অন্যান্য শহীদ মিনার ঘষা মাজা করা হয়। দিবস শেষ হয়ে গেলে কেউ ওই মিনারের আর খবর রাখে না। ওই শহীদ মিনারে গড়ে ওঠে মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয়।

সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গুরুদল বঙ্গবন্ধু নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়, এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, মানিকঝুঁড়ি মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসা,পচাঁকোড়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কড়াইবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।

আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাŸাচ্ছুম, মুগ্ধ, ফারাবি ও আনিন বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, কলেজের শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিতে হয়। এতে খুব খারাপ লাগে। আমরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানাই।
তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউনুচ মিয়া বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শিক্ষার্থীরা আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।

আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সফিউল আলম বলেন, উপজেলার ১৫টি বিদ্যালয় ছাড়া অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারীভাবে উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরো বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ সেলিম বলেন, উপজেলার ১২ টি বিদ্যালয় ও দুইটি কলেজে শহীদ মিনার আছে। কিন্তু কোন মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা প্রায়োজন।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ভাষা শহীদদের পরিচয় জানতে ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা স্থানীয় পর্যায়ে অর্থ সংগ্রহ করে শহীদ মিনার নির্মাণ করবেন। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলা প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments