Homeঅপরাধদশ মাস পর কুলুলেস হত‌্যা রহস‌্য উদঘাটন। আদালতে ভাগ্নের দায় স্বীকার

দশ মাস পর কুলুলেস হত‌্যা রহস‌্য উদঘাটন। আদালতে ভাগ্নের দায় স্বীকার

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ

বরগুনা তালতলীতে জমির লোভে ভাড়াটে খুনি এনে আপন খালা সুফিয়াকে হত‌্যা করেছে ভাগ্নে মালেক (৩৮) নামের এক গ্রাম পুলিশ। হত‌্যার মূল ঘটনা থেকে নিজেকে আড়াল করলে মামাকে বাদী বানিয়ে গ্রামের জমিজমা নিয়ে বিরোধীয় প্রতিপক্ষকে আসামী করেন তিনি। কুলুলেস এ হত‌্যাকান্ডের দশ মাস পর পুলিশ রহস‌্য উদঘাটন করেছে। এ ঘটনায় শনিবার সকালে কচুপাত্রা বাজার থেকে ঘটনার মুল হোতা মালেককে গ্রেফতার করে বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশ। ওইদিন বিকেলে তিনি ( মালেক) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ পরিদর্শক ও কুলুলেস হত্যা মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, গত বছরের ৩ এপ্রিল রাত আটটার সময় নিহত সাফিয়া বেগম বিকাশে টাকা তোলার জন্য ঘর থেকে বের হয়। এরপর তিনি নিখোঁজ হয়। ঘটনার তিনদিন পর ৬ এপ্রিল শারিকখালীর ধোপার ভিটার পূর্ব পাশে কালিরখালের কেওড়াগাছের নীচ থেকে তার মরদেহ তালতলী থানা পুলিশ উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় মালেক তার আপন মামা পটুয়াখালী জেলার ছোট বিঘাই গ্রামের ইউনুস চৌকিদাকে বাদী করে ওই দিনই তাদের সঙ্গে জমিজমা বিরোধ থাকা সোনা মিয়া, জাফর, সিদ্দিক ও ফারুক ঘরামীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে।

সাফিয়া খাতুন হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে গত বছরের জুন মাসে মামলাটি তদন্ত করতে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা সংস্থার উপর ন্যস্ত করা হয়। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, নিহত সাফিয়ার বিভিন্ন তথ্য জানতে গিয়ে তার ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরশীল ব্যাক্তি স্থানীয় ফকির করিম খাঁন নিখোঁজ থাকার বিষয়টি উঠে আসে। তাকে খুঁজে পেলে আসল রহস‌্য উদঘাটন হবে বলে ধারনা করি। পরে তাকে গত শুক্রবার মংলা পৌরসভা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

করিম খাঁ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সকল ঘটনা স্বীকার করে বলে নিহত সাফিয়া বেগম তাকে খুব মান্য করতো। এই ঘটনার মূলহোতা আব্দুল মালেকের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে সোনা মিয়ার সঙ্গে বিরোধ ছিল। সে ওই জমি দখল করতে ৪০ হাজার টাকায় আমাকে ভাড়া করে। বিকাশে টাকা তোলার পর বাড়ির সামনে আসলে তাকে আমি পাশের সূর্যমুখী ক্ষেতের কাছে নিয়ে যাই। ওইখানে মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে ভাগ্নে আব্দুল মালেক ও আমার সহায়তায় সাফিয়া বেগমকে হত্যা করে কালিরখালে পুঁতে রাখা হয়। পরে আব্দুল মালেক নিহত সাফিয়ার কানে স্বর্ণের রিং বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা দেয় এবং পালিয়ে যাওয়ার জন্য আরো ৫ হাজার টাকা দেয়। বাকী ১৫ হাজার টাকা আর দেয় নাই। আমি যেন ভারতে পালিয়ে যাই, ভারতে পালিয়ে গেলে কেউ আর এই ঘটনা জানতে পারবেনা সেই পরামর্শ দেন আব্দুল মালেক। এদিকে করিম খানকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশ ভাগ্নে হত‌্যার মুল হোতা আব্দুল মালেক পালিয়ে যাওয়া চেষ্টা কর। পরে কচুপাত্রা বাজার থেকে শনিবার সকালে তাকে বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওইদিন বিকেলে মালেক আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দি দেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বশির আলম বলেন, বিভিন্ন সোর্স ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে তালতলীর কুলুলেস সাফিয়া হত্যাকান্ডের প্রকৃত অপরাধী করিম খাঁকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করার পর হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ আব্দুল মালেকের কথা বলে। করিম খাঁনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা জেনে মালেক পালিয়ে যাবার চেষ্টা বরে। পরে শনিবার সকালে কচুপাত্রা বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, হত‌্যাকান্ডের মুল হোতা ভাগ্নে মালেক আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments