পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেও থামানো যাচ্ছে না অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। অভিযোগ রয়েছে, শান্তি চুক্তিকালীন শতভাগ অস্ত্র সরকারের কাছে জমা না পড়া এবং পার্বত্য অঞ্চলঘেঁষা অরক্ষিত সীমান্তই অবৈধ অস্ত্রের প্রধান উৎস।
যেখানে বহুদিনের সংঘাত শেষে শান্তি ফেরাতে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন শান্তিবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। দেশের এক দশমাংশ নিয়ে পাহাড়ি এ জনপদ। এরই মধ্যে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। তার মধ্যেও আঞ্চলিক বিভিন্ন সংগঠনের সংঘাতে সক্রিয়। পাহাড়ে শান্তির পরিবর্তে ঘটছে খুন, গুম, অপহরণ, হানাহানি আর রক্তক্ষয়ী সংঘাত।
নতুন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা মিলে নিয়মিতই অশান্ত খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান। সরকারের নানমুখী উন্নয়ন প্রকল্পে এসব এলাকা বদলে গেছে। তাও রয়ে গেছে পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি, চাঁদাবাজি, খুনোখুনি।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ ২৬ বছরে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় অধিবাসীদের মধ্যে এ ব্যাপারে হতাশা রয়ে গেছে। ২০১৬ সাল থেকে এ চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো এখনো বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে বান্দরবানের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো রয়ে গেছে। সব ধারা না হওয়া পর্যন্ত আমার মনে হয় না পূর্ণাঙ্গ শান্তি এখানে প্রতিষ্ঠা হবে।
বান্দরবানের সমাজকর্মী লেলুং খুমী বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তারা যদি চুক্তি বাস্তবায়ন না করে, তাহলে আমরা সহজে বুঝে নিতে পারি যে তাদের কোনো রাজনৈতিক সদিচ্ছাই নাই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবুর রহমান বলেন, এখন অশান্তি আরও অনেক বেশি বেড়েছে বলে আমি মনে করি। প্রতিনিয়ত এখানে গুম, খুন হচ্ছে। তবে সরকারপক্ষের দাবি, অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে পাহাড়ে বইছে শান্তির বাতাস।
বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ বলেন, আজকে যেদিকেই তাকাবেন সেখানে উন্নয়ন আর উন্নয়ন। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।
রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, স্কুল-কলেজ এগুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাইলের পর মাইল রাস্তা, মাইলের পর মাইল বিদ্যুৎ আছে।
৭২টি ধারার এই শান্তি চুক্তির বেশিরভাগ বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই নিষ্ক্রিয়। ফলে পাহাড়ে ঝুলে আছে সব ধরনের ভূমি জটিলতা।