কে এম শাহাবুদ্দিন শিহাব, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে সূর্য মাঝি নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ২২০ মন ইলিশ।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল)বঙ্গোপসাগরে মৌডুবি এলাকা থেকে পূর্ব-দক্ষিন ৪০ কিলোমিটার গভীরে মাছগুলো পান এফবি আল্লাহর দয়া-১ নামের একটি ট্রলারে। সমুদ্রে জাল টানতেই দেখা যায় পুরো জালে আটকে আছে রুপালি ইলিশে। সাধারনত, জেলেরা জাল থেকে মাছ আলাদা করে বরফ দিয়ে সংরক্ষন করে বিক্রির জন্য তীরে নিয়ে আসে কিন্তু সূর্য মাঝির জালে মাছের পরিমাণ এতো বেশী ছিল যে তিনি কিছু মাছ আলাদা করে এক পর্যায় জালসহ ট্রলারে মাছের স্তুপ করে কিন্তুু তাতেও সংরক্ষণ করা না গেলে পাশে থাকা ট্রলারকে জালের একাংশ কেটে জালসহ মাছ দিয়ে তীরে চলে আসেন ওই মাঝি।
গত শনিবার (৬ এপ্রিল) মৎস্য বন্দর আলীপুরে ট্রলার নিয়ে মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে আসেন তারা। পরে জালে আটকানো মাছগুলোকে আলাদা করে বিক্রি উদ্দেশ্যে আলীপুরের খান ফিসে নিলামের মাধ্যমে মাছ বিক্রি শুরু করেন। রবিবার সকাল ১১টায় এই মাছ বিক্রি শেষ হয়। বছরের সবচেয়ে বেশী মাছ পাওয়া এই ট্রলারটি বাশখালীর হাজী আহম্মদ শফী কোম্পানীর মালিকানাধীন। বাশখালীর হলেও এই ট্রলারগুলো মাছ বিক্রি করতে আলীপুর-মহিপুর বন্দরে আসে।
সূর্য মাঝি জানান, ওইদিন সমুদ্রে বের হয়ে জাল ফেলতেই অসংখ্য মাছ আটকা পরে। অতিরিক্ত মাছ আটকানোর কারনে আমরা পুরোপুরি নিয়ে আসতে পারিনি। তবে যে পরিমান মাছ অন্য ট্রলারকে দিয়ে আসছি সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার পিচ মাছ রয়েছে সেখানে অনন্ত ৫০ মণ মাছ হবে। আর আমরা তীরে যা নিয়ে আসছি সেগুলো থেকে বরফ সংকটের কারনে প্রায় ২০ মন মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে আর ১৫০ মন মাছ বিভিন্ন দামে বিক্রি করেছি। মাছগুলো একদম তাজা না থাকার কারনে কাঙ্খিত দাম পাইনি যা পেয়েছি তাতে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা দাম হবে। এই বছরের সবচেয়ে বেশী মাছ পেয়ে আমরা এবং আমাদের কোম্পানিও অনেক খুশী।
খান ফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আ. রহিম খান জানান, বাশখালীর এই ট্রলারটি আমার আড়তে মাছ বিক্রি করে। ট্রলারটিতে এই বছরে সবচেয়ে বেশী মাছ পেয়েছে। এখানে ১০টি দামে মাছ বিক্রি হয়েছে অর্থ্যাৎ ছোট, বড়, মাঝারি এবং মানের দিক দিয়ে বিভিন্ন দাম পেয়েছে। মাছগুলো সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৬০০ টাকা মণ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। আর মাছগুলো আলীপুর-মহিপুরের পাইকাররা ৫মণ ১০মণ করে কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছে। সামনে বৈশাখ থাকায় ভালোদাম পাওয়া যাবে।
কলাপাড়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে পালনের একটি সুফল হিসাবে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে জেলিফিশটা কমে গেছে আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে এই বছরের সবচেয়ে বেশী মাছ এই মাঝির জালে মিললো।
তিনি আরো জানান, আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরা নিষেধ। সে পর্যন্ত এরকম জেলেরা মাছ পাওয়ার আশা করছি।