Homeরাজনীতিখুলনায় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, আটক ৩৫

খুলনায় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, আটক ৩৫

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা জেলা প্রতিনিধিঃ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে খুলনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

আজ বুধবার (৩১ জুলাই ) দুপুর ২টায় নগরীর সাতরাস্তা মোড় থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা’ ময়লাপোতা মোড়, রয়েল মোড়, শান্তিধাম, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, বাইতিপাড়া, মৌলভিপাড়া, পিটিআই মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড, অসংখ্য টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে প্রায় ৬০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে।

স্থানীয়রা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করতে বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়কে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা নগরীর শিববাড়ী, রয়েল মোড়, সাত রাস্তার মোড়, ময়লাপোতা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ সময় খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে।

দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের এক দল ময়লাপোতা সংলগ্ন এলাকা মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশে ধাওয়া করে। এদের একটি অংশ পার্শ্ববর্তী আহসানুল্লাহ কলেজে আশ্রয় নেন। তারা ভবনের ভেতর ঢুকে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তালা ভেঙে তাদের কয়েকজনকে আটক করে।

পরে দুপুর পৌনে ২টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রয়েল মোড ঘুরে সাত রাস্তার মোড় অবরোধ করে বিএমএ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। আরেকটি অংশ রয়েল মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি দুই দিক দিয়ে আটকে রাখে।

এতে উত্তেজনায় এক পর্যায়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই সংঘর্ষ খানজাহান আলী রোড, মর্ডান মোড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আধঘণ্টার চেষ্টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অপরদিকে দুপুর দেড়টার পরে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ডালমিল মোড় থেকে লাঠি নিয়ে মিছিল বের করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে শেরেবাংলা রোড থেকে ছাত্রলীগের আরেকটি মিছিল ময়লাপোতা হয়ে সাত রাস্তার দিকে চলে যায়।

খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন খান বলেন, আমদের ঘোষণা দেওয়া ছিল আর কোনো ছাত্রকে আন্দোলন করতে দেওয়া হবে না। তারা আইন নিজেদের হাতে নিয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা নগরীর রয়েল মোড়ে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ রয়েল মোড় ও আশপাশের এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩৫ জনকে আটক করে। পুলিশ ও বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে আন্দোলনকারীরা রয়েল মোড়ে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। এছাড়া নগরীর শিববাড়ী মোড়েও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা মঙ্গলবার রাতে খুলনা সার্কিট হাউসে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। কিন্তু কিছু সংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments