Homeআঞ্চলিকছাত্রদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব দেশের মানুষ আজ আওয়ামী দুঃশাসনের...

ছাত্রদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব দেশের মানুষ আজ আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে- মাওঃ আব্দুল আউয়াল

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা জেলা প্রতিনিধিঃ

শুক্রবার (৯ আগষ্ট ) বিকাল ৪ টায় নগরীর পাওয়ার হাউজ মোড়ে গণহত্যাকারী, জালিম ও স্বৈরাচার সরকারের পতন পরবর্তী সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওঃ আব্দুল্লাহ ইমরান এর সভাপতিত্বে মহানগর ও জেলা আয়োজিত গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর ও খুলনা মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওঃ আব্দুল আউয়াল।

গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বর গণহত্যাকারী, জালিম ও স্বৈরাচার সরকারের উৎখাতের সংগ্রামের সূচনা করেছে এ দেশের গর্ব ছাত্র সমাজ। তাদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব দেশের মানুষ আজ নৃশংস আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে । ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলন রাজপথে ছিলো। স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় দেশ গড়ার। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে পীর সাহেব ঘোষিত নয় দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সেক্রেটারি মুফতী ইমরান হুসাইন ও জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ গালীবের যৌথ সঞ্চালনায় গন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মুফতী আমানুল্লাহ, শেখ মুহাম্মাদ নাসির উদ্দিন, আলহাজ্ব আবু তাহের, জেলা সহ-সভাপতি শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মাওঃ মুজিবুর রহমান, শেখ জামিল আহমেদ, মুফতী মাহবুবুর রহমান।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন হত্যা, লুটতারাজ ও অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগের বিরুদ্ধে ছিলো। দেশের সম্পদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে ছিলো। তাই আমরা বিশ্বাস করি, যারা লুটতরাজ, দখলদারী ও অরাজকতায় লিপ্ত তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত কেউ না। বরং তারা সুযোগ সন্ধানী। তাদের চিহ্নিত করে এখনই সব ধরণের অরাজকতা বন্ধ করুন। যারা অরাজকতা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করুন। যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে তাদের প্রতিরোধে এলাকায় এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করুন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা মনে করি দেশের সকল নাগরিক সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রাপ্ত। ধর্মের কারণে কাউকে আঘাত করা বা কাউকে প্রতিপক্ষ বানানোকে ইসলাম ও রাষ্ট্রিয় আইনও সমর্থন করে না। আমাদের আন্দোলনের চেতনাও তা সমর্থন করে না। সেজন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সংখ্যালঘুদের প্রতিটি উপসানালয় ও ধর্মীয় স্থাপনায় পাহারার ব্যবস্থা করেছে। খুলনার শান্তি ফিরিয়ে আনতে গনমানুষকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি।

গণ-সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন মাওঃ ইমদাদুল্লাহ কাশেমী, জয়েন্ট সেক্রেটারী মোহাম্মদ আবু গালিব, মোঃ রেজাউল করীম, অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মোঃ মঈন উদ্দিন, মাওলানা হারুনুর রশিদ, এইচএম আরিফুল ইসলাম, গাজী মিজানুর রহমান, শেখ হাসান ওবায়দুল করীম, মোঃ মহিবুল্লাহ, মোঃ হুমায়ুন কবির, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা আসাদুল্লাহ হামিদী, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, ডাক্তার মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ্যাডঃ কামাল হোসেন, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মাওলানা নাসিম উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রওশন আলী, আলহাজ্ব সরোয়ার বন্দ, ডাক্তার রাকিবুল ইসলাম, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, হাফেজ আব্দুল লতিফ, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, মোল্লা রবিউল ইসলাম, গাজী ফেরদাউস সুমন, শেখ মোঃ নাজমুল হুদা, মোঃ এনামুল হাসান, নুরুল হুদা সাজু, মাষ্টার মঈনুদ্দিন ভুইঁয়া, মাওলানা আবু সাঈদ, মোঃ ইসমাইল হোসেন, আলহাজ্ব মারুফ হোসেন, ক্বারী জামাল হোসেন, কাজী তোফায়েল হোসেন, মোহাম্মদ কবির হোসেন, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুম, কারা বরণকারী নেতা আলহাজ্ব জাহিদুর ইসলাম টুটুল মোড়ল, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, আলফাত হোসেন লিটন, ইসমাইল হোসেন দুলাল, মোঃ কামরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা এস এম আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইলিয়াস হোসেন, মোঃ ইব্রাহিম খান, যুবনেতা মুফতি আমিরুল ইসলাম, মুফতি ফজলুল হক ফাহাদ, ইমরান হোসেন মিয়া, আব্দুস সবুর, এস কে নাজমুল হাসান, মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন, মোঃ আমজাদ হোসেন, শিক্ষক নেতা মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে, মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র নেতা আবু রায়হান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফরহাদ মোল্লা, মাহাদী হাসান মুন্না, নাঈম ইসলাম, মোস্তফা আল গালিব, মোঃ রফিকুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ মেসবাহ, মোঃ বনি আমিন, মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

ইসলাম আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত নয় দফা।

১. অনতিবিলম্বে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শক্রমে অনুর্ধ্ব ১৫ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। যার মেয়াদ ৬ মাসের বেশি হতে পারবে না।
২. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
৩. গ্রহনযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আহত/নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

৪. তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৬ বছরে সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সকল সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনবার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সকল দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
৫. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৬. দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।
৭. নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠ গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (চ.জ) চালু করতে হবে।
৮. আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষাখাতের মান ও নৈতিকতা। এই ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষাকমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৯. উলামায়ে কেরাম জাতির ধর্মীয় নেতৃত্ব প্রদান করেন। তারা উম্মাহর ঈমান-আমল রক্ষায় কাজ করেন। সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি অবশ্যই থাকতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments